ভ্রমণ সঙ্গী কীভাবে নির্বাচন করবেন! ভ্রমণ সঙ্গী খুঁজচ্ছেন? ভ্রমণে যাবেন অথচ একা যেতে ভয় করছে? ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে কাউকে নিতে চাচ্ছেন অথচ কাকে নিবেন বুঝতে পারছেন না? কিভাবে বাছাই করবেন ভ্রমণ সঙ্গী এই সব কিছু নিয়ে আজকের আর্টিকেল ভ্রমণ সঙ্গী কীভাবে নির্বাচন করবেন।
আশাকরি সম্পূর্ণ লেখাটি মনযোগ দিয়ে পড়লে আপনি ভ্রমণ সঙ্গী বাছাই করার ধরনা পেয়ে যাবেন। যা আপনার ভ্রমণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
চলুন শুরু করা যাক…
ভ্রমণ সঙ্গী
ভ্রমণসঙ্গী খুঁজচ্ছেন?
আমরা অনেকেই Solo Traveling করে থাকি। আবার অনেকে কয়েকজন মিলে গ্রুপ করে ভ্রমণ করে থাকেন। এই ২ ভাবেই আপনি ভ্রমণের পরিপূর্ণ স্বাদ পেতে পারেন তবে, কেউ একা ভ্রমণ করে আনন্দ পায় আবার কেউ গ্রুপের সাথে ভ্রমণ করে আনন্দ পায়।
একা ভ্রমণে আপনাকে ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে কাউকে খুঁজতে হয় না কিন্তু, গ্রুপ ট্রিপে ভ্রমণ সঙ্গী হিসেবে কাউকে না কাউকে খুঁজে নিতে হয় সেটা এক বা একাধিক হতে পারে।
এই এক বা একাধিক ভ্রমণসঙ্গীর জন্য আমরা আমাদের কাছের বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে থাকি বা, পরিবার অথবা আত্মীয়-স্বজন কাউকে সাথে নিয়ে ভ্রমণ করে থাকি। এছাড়া এই তালিকায় অফিস বা কর্মক্ষেত্রের কলিগরা তো আছেনই।
কিন্তু সমস্যা হল, সবাই সব সময় ভ্রমণের জন্য প্রস্তুত থাকেন না বা সবার সব সময় ভ্রমণের জন্য সময় হয়ে উঠে না। কারন, ভ্রমণের জন্য যেমন দরকার সময় এবং টাকা-পয়সা তেমনি প্রয়োজন ভ্রমণ করার মানসিকতার। যেটা সবার সব সময় থাকে না।
আপনার হয়তো ইচ্ছে হলঃ আজ রাতেই ভ্রমণে যাবার কিন্তু আপনি নক করে কাউকে রাজি করাতে পারলেন না বা আপনার সাথে আজ রাতেই ভ্রমণে যাবে এমন কোন পরিচিত ভ্রমণ সঙ্গী পেলেন না।
আবার আপনি যে একা ভ্রমণে যাবেন সেটাতে আপনি অভ্যস্ত নন। আপনার হয়তো একা ভ্রমণ ভালো লাগে না। বন্ধুদের সাথে হৈ হুল্লোড় না করে ভ্রমণ করলে আপনার ভ্রমণ পরিপূর্ণ হয় না।
এই মুহূর্তে আপনি কি করবেন? আপনার যে ভ্রমণে যেতে ইচ্ছে করছে!
আমার প্রায় ১১ বছরের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা থেকে আমি অনেককে দেখেছি ভ্রমণ সঙ্গীর জন্য হুট করেই কোন একটা গ্রুপে বা কোন ফোরামে অথবা নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে দেন।
স্ট্যাটাসের ফলাফল আসে ২টা।
১। খুবই ভালো ফলাফল। স্ট্যাটাস পেয়ে অনেকেই ভ্রমণ সঙ্গী হওয়ার জন্য রাজি হয়ে যান। ব্যাকপ্যাক গুছিয়ে কোথাও একসাথে মিলিত হয়ে চলে যান ভ্রমণে। ভ্রমণ শেষে আনন্দ করতে করতে বাড়ি ফিরেন।
২। ফলাফল খুবই খারাপ! স্ট্যাটাস পেয়ে অনেকেই ভ্রমণসঙ্গী হওয়ার জন্য রাজি হয়ে যান। ব্যাকপ্যাক গুছিয়ে কোথাও একসাথে মিলিত হয়ে চলে যান ভ্রমণে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কোন এক নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে সাথে থাকা সব কিছু (ক্যামেরা, মোবাইল, টাকা পয়সা ইত্যাদি) কাড়ে নিয়ে যায়। এরপর কান্না করতে করতে বাড়ি ফিরেন।
কারন, হুট করে পাওয়া এই ভ্রমণ সঙ্গী ছিলেন সম্পূর্ণ অপরিচিত।
আপনি হয়তো প্রথম এই জাতিয় লোকদের সাথে কথা বলে বুজতেই পারবেন না যে তারা কতটা খারাপ বা ভয়ঙ্কর। এদের অনেক গুলো ছদ্দবেশী টীম রয়েছে। তারা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপ গুলোতে যুক্ত হয়ে থাকে এবং সময় ও সুযোগ বুঝে আপনার সাথে ভ্রমণসঙ্গী হয়ে আপনার বিপদ ডেকে আনে।
কীভাবে ভ্রমণ সঙ্গী নির্বাচন করবেন
উপরের লেখা টুকু পড়ে আশাকরি বুজে গেছেন কেন আপনার ভ্রমণ সঙ্গী নির্বাচন করা প্রয়োজন। এবার চলুন আমরা জানি, কীভাবে ভ্রমণ সঙ্গী নির্বাচন করতে হবে।
- প্রথমতো অপরিচিত কাউকে ভ্রমণ সঙ্গী হিসেবে না নেয়াই ভালো। কারন, এতে আপনি আপনার পরিচিত সঙ্গীর সাথে যেভাবে আনন্দ করতে পারতেন অপরিচিত কারও সাথে সেভাবে আনন্দ করতে পারবেন না।
- অপরিচিত ভ্রমণ সঙ্গীর সাথে আপনার খাবার মেনু পছন্দ করা থেকে শুরু করে রুম শেয়ার করা, স্থান নির্বাচন করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে মিল নাও হতে পারে। এতে ভ্রমণে বিষন্নতা চলে আসতে পারে। কারন আপনিতো তার রুচি সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না।
- ফেসবুক গ্রুপ বা অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ভ্রমণসঙ্গী নির্বাচন করার সময় খেয়াল রাখুন তিনি পূর্বে কারো সাথে বা নিজে কোথাও ভ্রমণ করেছেন কিনা। তার প্রোফাইল ঘুরে দেখতে পারেন।
- আপনার অপরিচিত ভ্রমণ সঙ্গী সম্পর্কে যতটা সম্ভব তথ্য কালেক্ট করুণ। যেমনঃ তিনি কোথায় থাকেন, কি করেন, ই-মেইল ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার, ওয়েবসাইট ইত্যাদি।
- এরপর দেখুন আপনার পরিচিত কারও সাথে তিনি মিচুয়াল ফ্রেন্ড হিসেবে আছেন কিনা। থাকলে আপনার পরিচিত বন্ধুর কাছ থেকে তার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
- সর্বদা ভ্রমণে বিভিন্ন দেশের জরুরী নাম্বার গুলো মনে রাখবেন। বাংলাদেশের জরুরী নাম্বার হচ্ছেঃ ৯৯৯ ।
- আপনার ভ্রমণসঙ্গী সাথে করে নেশা জাতীয় দ্রব্যাদি নিচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে সর্বদা সতর্ক থাকুন।
- ভ্রমণের শুরুতে আপনার অপরিচিত ভ্রমণসঙ্গীর সাথে একটি ছবি তুলে রাখতে পারেন এবং কাছের কারও সাথে সেটা শেয়ার করতে পারেন। চাইলে ফেসবুকে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে রাখতে পারেন। এতে অন্যরা বুঝতে পারবে আপনি কার সাথে ভ্রমণে যাচ্ছেন।
এছাড়াও আপনি একাকী ভ্রমণ করার টিপস এবং ৭টি জীবন রক্ষাকারী ভ্রমণ হ্যাক টিপস দেখতে পারেন। আশাকরি উপরের বিষয় গুলো মেনে চললে আপনার ভ্রমণে বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। তবে ভ্রমণে অবশ্যই সর্বদা সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন।
এছাড়া আপনার কাছে যদি এই বিষয়ে আরও কোন টিপস থাকে তাহলে নিচের মন্তব্য বক্সে শেয়ার করতে পারেন। আপনার ভ্রমণ হোক নিরাপদ এবং আনন্দময়।
আরও: বাংলাদেশের ৬৪ জেলার দর্শনীয় স্থান
ফেসবুক: Kuhudak
চমৎকার টিপস। আমিও একজন ভ্রমণকারী ভাই
ধন্যবাদ হাসান ভাই
এ টাইপ ভ্রমনে আপনাকে অনন্য কারো উপর বিশসাস রাখতেই হবে। কিচ্ছু করার নেই। তবে সতর্ক থাকতে হবে।
অসাধারণ টিপস।
ধন্যবাদ
ভাল গাইড! আর দেশের বাইরে গেলে তাদের পাসপোর্ট এর কপি নেয়া যায়। 🙂
GoArif-এ আপনাকে স্বাগতম! আপনি ঠিক বলেছেন সাইফুল ইসলাম ভাই 🙂
ধন্যবাদ।