হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ (Hajiganj Boro Masjid) বা হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার হাজীগঞ্জ বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। প্রায় ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এই মসজিদটির প্রথম উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা হাজী আহম্মদ আলী পাটওয়ারী।
আজকের পোস্টে আমরা হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ বা হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। চলুন শুরু করা যাক…
আরও: বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্স
ভ্রমণ স্থান | হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ |
ধরন | মসজিদ |
অবস্থান | হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম |
স্থাপিত | প্রায় ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দ |
উদ্বোধন | ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ |
আয়তন | ২৮,৪০৫ বর্গফুট |
সৃষ্টিকারী | আহম্মদ আলী পাটওয়ারী |
পৃষ্ঠপোষক | আহম্মদ আলী পাটওয়ারী ওয়াকফ এস্টেট |
গম্বুজ সংখ্যা | ২টি |
ধারণক্ষমতা | প্রায় ১০,০০০ |
মিনার | ১টি |
মিনারের উচ্চতা | ১৮৮ ফুট |
উপাদানসমূহ | ইট, টেরাকোটা ও টাইল |
ঢাকা থেকে দূরত্ব | ১০২ কিলোমিটার (প্রায়) |
ড্রোন উড়ানো যাবে | হ্যাঁ |
বাংলাদেশের ষষ্ঠ বৃহৎ মসজিদটিতে ১৮৮ ফুট উঁচু দৃষ্টিনন্দন মিনার রয়েছে। বর্তমানে মসজিদটি আহমাদ আলী পাটোয়ারী ওয়াক্ফ এস্টেটের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
আরও: পাগলা মসজিদ
ইতিহাস ও অবকাঠামো
ইতিহাস সূত্রে জানা যায় যে, বাংলা প্রায় একাদশ শতকের গোড়ার দিকে মকিম উদ্দিন (রঃ) আরব দেশে থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে হাজীগঞ্জ এসেছিলেন। ধারণা করা হয়, তার নামানুসারেই পরবর্তীতে এই স্থানের নাম হয় মকিমাবাদ। মকিম উদ্দিন (রঃ) বংশের শেষ মানুষ হাজী মনিরুদ্দিনের নাম বিবর্তিত হয়ে এই অঞ্চলের নাম হাজীগঞ্জ হয়েছিল।
পরবর্তীতে তার নাতি হাজী আহমাদ আলী পাটোয়ারী (রহঃ) হাজীগঞ্জ বড় মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শুরুর দিকে মসজিদটি একচালা খড়ের তৈরি ছিল কিন্তু পরবর্তীতে মসজিদটি টিনের ২চালা করা হয়।
তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী একে এম ফজলুল হক, নওয়াব মোশারফ হোসেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও নওয়াবজাদা খাজা নসরুল্লাহসহ বেশ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ১৩৪৪ বঙ্গাব্দের ১০ অগ্রহায়ণ প্রথম জুমার নামাজের আযান দেয়ার মাধ্যমে মসজিদ উদ্বোধন করা হয়।
হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের আয়তন প্রায় ২৮,৪০০ বর্গফুট এবং এখানে একসাথে প্রায় ১০ হাজার মুসল্লী নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটি ২তলা বিশিষ্ট। এছাড়া ১টি ১৮৮ ফুট লম্বা মিনার ও ২টি গম্বুজ রয়েছে। হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের পাশে আলীয়া মাদ্রাসা, হাফেজীয়া মাদ্রাসা, ফোরকানীয়া মাদ্রাসা ও ইসলামীয়া পাঠাগার রয়েছে।
আরও: নেদায়ে ইসলাম
কিভাবে যাবেন
আপনি বাংলাদেশের যে কোন স্থান থেকে এখানে ভ্রমণে যেতে পারবেন। রাজধানী ঢাকা থেকে ভ্রমণে যেতে চাইলে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে চাঁদপুরগামী অনেক বাস নিয়মিত বিরতিতে ছেড়ে যায়। বাসে চড়ে আসলে চলে আসতে পারেন হাজীগঞ্জ। আর এখানেই রয়েছে এই মসজিদ টি।
চাইলে আপনি লঞ্চে করে ভ্রমণে যেতে পারেন। ঢাকা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে চাঁদপুর রুটে এমভি সোনারতরী, এমভি তাকওয়া, এমভি আল বোরাক, এমভি ঈগল, এমভি রফরফ, এমভি বোগদাদীয়া, এমভি মেঘনা রাণী, এমভি তুতুল ইত্যাদি লঞ্চ যাতায়েত করে থাকে। চাইলে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকেও যেতে পারবেন।
লঞ্চে চাঁদপুর যেতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টা। ভাড়া নিতে পারে ১২০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা।
চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনাল নেমে চাঁদপুরের তালতলা বাস স্ট্যান্ড থেকে হাজীগঞ্জগামী বাসে চড়ে বাসের হেলপারকে বড় মসজিদের নাম বললে আপনাকে মসজিদের সামনে নামিয়ে দিবে।
কোথায় খাবেন
ভ্রমণে গিয়ে খাওয়ার জন্য অনেক হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট পাবেন। লঞ্চে গেলে চাঁদপুর নেমে চাঁদপুরের বিখ্যাত ইলিশ মাছ খেতে পারেন। সাথে ওয়ান মিনিট আইসক্রিমের স্বাদ নিতে পারেন। এছাড়া হাজীগঞ্জ গিয়েও প্রচুর খাবারে হোটেল পাবেন।
আরও: বাংলাদেশের ৬৪ জেলার বিখ্যাত খাবারের তালিকা
কোথায় থাকবেন
এই স্থানটি একদিনের ভ্রমণের জন্য উত্তম। তবে আপনি যদি ভ্রমণে গিয়ে থাকতে চান তাহলে, সদর হসপিটালের সামনে হোটেল গ্র্যান্ড হিলশাতে থাকতে পারেন। হোটেল গ্র্যান্ড হিলশা ভালো মানের হোটেল বলা চলে। এছাড়া চাইলে চাঁদপুর এসেও থাকতে পারেন।
ফেসবুক: Kuhudak