নদীর পারে আমার প্রথম ক্যাম্পিং আব্বুর সাথে। আমার সব বন্ধু স্কুল থেকে ফিরে হোমওয়ার্ক করে। আর আমি? আমি অপেক্ষা করি নতুন কোনো অ্যাডভেঞ্চারের জন্য! সেদিন আব্বু হঠাৎ বললেন, “রাফি, তুমি তো প্রকৃতিকে অনেক ভালোবাসো। এবার আমরা নদীর ধারে ক্যাম্পিং করতে যাব।”
আমি তো শুনেই লাফ দিয়ে উঠলাম!
ব্যাগে ভরে ফেললাম আমার টর্চ লাইট, নোটবুক, রঙ পেন্সিল আর প্রিয় কচ্ছপটা (প্লাস্টিকের, কিন্তু আমি বলি সে বেঁচে আছে)।
আমরা যখন নদীর ধারে পৌঁছালাম, তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। চারপাশে কিচিরমিচির পাখির আওয়াজ, হালকা বাতাসে পাতাগুলোর দোল খাওয়া — যেন গান গাইছে।
আব্বু তাঁবু খাটাচ্ছিলেন আর আমি আশেপাশে ঘুরছিলাম। হঠাৎ দেখি পানির পাশে এক রঙিন পাথর! আমি কুড়িয়ে নিলাম। আব্বু বললেন, “প্রতিটি পাথরেরও একটা গল্প থাকে।” আমি পাথরটাকে বললাম, “তুমি আমাকে তোমার গল্প বলো!”
রাতে তাঁবুর ভিতর থেকে আকাশে তাকিয়ে দেখি লক্ষ লক্ষ তারা। আমি প্রথমবার বুঝলাম তারা আসলে এত কাছের মতো লাগে কেবল তখনই, যখন শহরের আলো নিভে যায়।
একটা পেঁচার ডাক, একটু দূরে ব্যাঙের ডাক — আমি কল্পনায় ভাবছিলাম, হয়তো কোনো পরী এই জঙ্গলের মধ্যেই থাকে!
পরদিন সকালে আমরা পাখির ডাক শুনে ঘুম থেকে উঠি। আব্বু আমাকে বললেন, “রাফি, প্রকৃতিকে ভালোবাসতে শিখলে, জীবনটা অনেক সুন্দর হবে।”
আমি মনে মনে ঠিক করলাম, বড় হয়ে আমি একজন প্রকৃতি রক্ষক হবো। যারা গাছ কাটে, নদী নোংরা করে — তাদের বন্ধ করব।
আমার প্রথম ক্যাম্পিং ভ্রমণ আমাকে শুধু আনন্দই দেয়নি, একটা নতুন ভাবনার দরজাও খুলে দিয়েছে।
লেখক: রাফি (বয়স ৮)
ইউটিউব: Kuhudak

