বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট (Banglabandha Zero Point) বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ১নং বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে অবস্থিত। বাংলাদেশের সর্বোত্তরে অবস্থিত বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর বাংলাদেশের একমাত্র স্থল বন্দর যার মাধ্যমে চারটি দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান) মধ্যে পণ্য আদান-প্রদানের সুবিধা রয়েছে।
আজকের পোস্টে পঞ্চগড়ের (Panchagarh) বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। চলুন শুরু করা যাক…

আরও: তিস্তা ব্যারেজ
বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ভ্রমণ
| ভ্রমণ স্থান | বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট |
| ধরন | বর্ডার, বন্দর |
| অবস্থান | বাংলাবান্ধা, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়, রংপুর |
| আয়তন | প্রায় ১০ একর |
| নির্মাণ | ১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ সাল |
| ঢাকা থেকে দূরত্ব | প্রায় ৪৬৫ কিলোমিটার |
| বাংলাবান্ধা থেকে শিলিগুড়ি দূরত্ব | প্রায় ৭ কিলোমিটার |
বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট হিমালয়ের কোল ঘেঁষা মহানন্দা নদীর তীরে ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী প্রায় ১০ একর জমির উপর জিরো পয়েন্ট বা বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর নির্মাণ করা হয়।

আরও: ভিন্নজগত পার্ক
ইতিহাস
বন্দরটি ১৯৯৭ সালের ১লা সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হয়। শুরুতে নেপালের সাথে বাংলাদেশের এক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় পণ্য আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে বন্দরটি প্রথম যাত্রা করে। তবে পরবর্তীতে ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতের সাথে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় ভারতের সাথেও বাংলাদেশের এ বন্দর টি পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য ব্যাবহার শুরু করা হয়।

বর্তমানে বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরের মাধ্যমে ভারত, নেপাল এবং ভুটানের সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আপনি জিরো পয়েন্ট ভ্রমণে গেলে দেখতে পাবেন যে, কংক্রিট দিয়ে নির্মিত রয়েছে বিশালাকৃতির একটি জিরো! বলা হয় যে, বাংলাদেশের সীমানা এই জিরো পয়েন্ট থেকেই শুরু হয়েছে।

ভ্রমণে এখানে চোখে পড়বে চারপাশে সবুজে ঢাকা ও খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, যার ফলে যে কারো মন ভাল করে দেয়ার জন্য যথেষ্ঠ হবে। এছাড়া এখানে জিরো পয়েন্টের ফটকের কাছে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের জাতীয় পতাকা টানানো রয়েছে। তবে অনুমতি ছাড়া সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন না।

আরও: হ্যাপি আইল্যান্ড
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে জিরো পয়েন্টের দূরত্ব প্রায় ৪৬৫ কিলোমিটার। আর বাংলাবান্ধা থেকে ভারতের শিলিগুড়ি শহরের দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার এবং দার্জিলিংয়ের দূরত্ব প্রায় ৫৮ কিলোমিটার।

বাংলাবান্ধা থেকে নেপালের কাকরভিটা সীমান্তের দূরত্ব রয়েছে প্রায় ৩০ কিলোমিটারের মত। পর্যটকেরা জিরো পয়েন্ট দিয়ে সড়কপথে বাংলাদেশ – ভারত – নেপাল – ভুটান যাতায়াত করে থাকে। ফলে পঞ্চগড় জেলা পর্যটকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

আপনি বাংলাদেশের যে কোন স্থান থেকে এখানে ভ্রমণে যেতে পারবেন। রাজধানী ঢাকার শ্যামলী, গাবতলী ও মিরপুর বাস টার্মিনাল থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইস, বুড়িমারী এক্সপ্রেস, নাবিল পরিবহন, তানযিলা ট্রাভেল, বরকত ট্রাভেল ইত্যাদি পরিবহণে করে পঞ্চগড় যেতে পারবেন।
ভাড়া: বাসে ভ্রমণে যেতে এসি বা নন এসি বাসে ১,০০০ টাকা থেকে ২,০০০ টাকা নিতে পারে।
বি:দ্র: আপনি যদি সরাসরি তেঁতুলিয়া যেতে চান তাহলে, হানিফ এন্টারপ্রাইস অথবা বুড়িমারী এক্সপ্রেস বাসে যেতে পারেন।
পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ার পথে সারাদিন নিয়মিত বিরতিতে লোকাল বাস পাবেন। বাসে যাওয়ার জন্য টিকেটের মূল্য নিতে পারে জনপ্রতি ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকা। বাস থেকে তেঁতুলিয়া বাজারে নেমে ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সায় করে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে চলে আসবেন।
আপনি চাইলে ট্রেনে যেতে পারেন। ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে যেতে চাইলে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনে পঞ্চগড় যেতে পারবেন।
ভাড়া: ট্রেনে ভ্রমণের টিকেট মূল্য জনপ্রতি ৭০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা নিতে পারে।
কোথায় খাবেন
ভ্রমণে সাথে করে অবশ্যই খাবার পানি রাখবেন। তবে ভ্রমণে গিয়ে খাওয়ার জন্য জিরো পয়েন্টের আশেপাশে খাবারের দোকান পাবেন। এছাড়া তেঁতুলিয়া এসে খাবারের হোটেল থেকে খেয়ে নিতে পারেন।
আরও: বাংলাদেশের ৬৪ জেলার বিখ্যাত খাবারের তালিকা
কোথায় থাকবেন
ভ্রমণে গিয়ে থাকার জন্য তেঁঁতুলিয়ায় কাজী ব্রাদার্স হোটেল ও সীমান্তের পাড় নামে ২টি আবাসিক হোটেল পাবেন। এছাড়া মহানন্দা নদী তীরের ডাকবাংলোতে থাকতে চাইলে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে থাকতে হবে।
ভাড়া: তেঁঁতুলিয়ায় কাজী ব্রাদার্স হোটেল ও সীমান্তের পাড় আবাসিক হোটেলে থাকার এসি ও অন এসি রুমের ভাড়া ৬০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা নিতে পারে।

ইউটিউব: কুহুডাক



Add your first comment to this post
You must be logged in to post a comment.